ফরিদপুর প্রতিনিধি: বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংসকে প্রেরণা হিসেবে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখা ‘বিস্ময় বালক’ মাগুরার ফাহিম উল করিম বুধবার রাতে মারা গেছে। বুধবার রাতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ডুচেনে মাসকিউলার ডিসথ্রপি রোগে ফাহিম ২০১২ সাল থেকে শারীরিক বিকলাঙ্গতা নিয়ে বিছানাবন্দি থাকলেও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় আয় করত আট ডলার।
মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহিম এ শহরের পিটিআইপাড়ার রেজাউল করিমের ছেলে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন তার শরীরে ডিএমডি রোগ ধরা পড়ে। এতে চলাফেরায় সে হয়ে পড়ে অক্ষম। তারপরও বেঁচে থাকার প্রেরণা পেয়েছেন বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংসের জীবন থেকে। বিছানাবন্দি অবস্থায় বাবার এনড্রয়েড মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইন ঘাঁটাঘাঁটি করে। সেখানকার মার্কেট প্লেসে টপ রেটেড একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে জায়গা করে নেয় ফাহিম।
চলাচলে অক্ষম ফাহিমকে ল্যাপটপের সামনে বসিয়ে দিলে বালিশে হেলান দিয়ে শুধু মাউস ঘুরিয়ে ফাইভার ও আপওয়ার্কের কাজ করে যেতে পারত। তার রেটিং ছিল ৯৭ শতাংশ। এর মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় সে আট ডলার পর্যন্ত আয় করত।
উদ্দীপনায় ভরপুর ফাহিম একদিন হয়তো আরও ১০ জনের মতো সুস্থ হয়ে উঠবে- এমন প্রত্যাশা নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যেত। কিন্তু কয়েক দিন আগে হঠাৎ তার অসুস্থতা বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় তাকে মঙ্গলবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বুধবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
দরিদ্র এ পরিবারের বড় সন্তান ফাহিম উল করিম। তার ছোট বোন ফারিয়া করিম এ বছর দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। অসুস্থ অবস্থাতেও সে তাদের পরিবারের বড় অবলম্বন ছিল বলেই মনে করেন মা হাজেরা খাতুন। আউটসোর্সিংয়ে উৎসাহীদের কাছে অনুপ্রেরণার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ফাহিমের মৃত্যু অনেককে ব্যথিত করে তুলেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে তার লাশ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।